অল্প কয়েক বছরেই সনাতনী শিক্ষার ধারণায় অতি দ্রুত পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষার জন্য শ্রেণিকক্ষে শারীরিক উপস্থিতির অপরিহার্যতা কমতে শুরু করেছে। আমরা এখন অনলাইন শিক্ষার এক বৈপ্লবিক যুগে প্রবেশ করছি। ইন্টারনেট ভিত্তিক শিক্ষার বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত না করেও বলা যায়, আমাদের প্রচলিত শ্রেণিকক্ষভিত্তিক শিক্ষার সীমাবদ্ধতার তুলনায় নতুন এই শিক্ষাপদ্ধতি অনেক বিস্তৃত। বাবসন সার্ভে রিসার্চ গ্রুপের সাম্প্রতিক জরিপ প্রতিবেদন বলছে, আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষার্থীদের শতকরা ৩০ ভাগের বেশি অন্তত একটি দূরশিক্ষণ কোর্স গ্রহণের সুফল লাভ করেছেন। আমাদের দেশেও এই বিষয়টির অগ্রগতি হতাশাজনক নয়।অনলাইন শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা স্ব-স্ব শিক্ষণীয় বিষয়সূচি নিজেদের প্রাত্যহিক কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করে সে অনুযায়ী অনুসূচি তৈরি করতে পারেন। অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষা বহির্ভূত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাদ না দিয়েও শিক্ষা ভালোভাবে অর্জন করা সম্ভব। এভাবে অনলাইনে অধ্যয়ন করতে গিয়ে আমাদের জীবনের জন্য অতি প্রয়োজনীয় সময় ব্যবস্থাপনায় আমরা দক্ষ হয়ে উঠছি। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়েই শিক্ষা বিষয়ক নিজস্ব পছন্দের বিষয় বাস্তবায়ন করতে পারছেন। আর নৈব্যত্তিক পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করার মাধ্যমে তার পরিপুর্ণ বিস্তার লাভ করা সম্ভব ।
প্রশ্ন-১. ২০০৯ সালের ২৮ আগস্ট শুক্রবার ছিল। ঐ বছরের ১লা অক্টোবর কি বার ছিল ?
প্রশ্ন-২. প্রত্যেকটি অফিসের একটি কি আছে ?
প্রশ্ন-৩. সৎ যদি অসৎ হয় তাহলে দাতা হবে কি ?
(২৩ অক্টোবর ১৯২৯ - ১৮ আগস্ট ২০০৬) বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি। জীবদ্দশাতেই তিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি হিসেবে মর্যাদালাভ করেছিলেন। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ, তথা পঞ্চাশের দশকে তিনি আধুনিক কবি হিসেবে বাংলা কবিতায় আবির্ভূত হন এবং অল্প সময়ের ভেতরেই দুই বাংলায় (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম বাংলায়) কবি হিসেবে পরিচিতি পান। আধুনিক কবিতার অনন্য পৃষ্ঠপোষক বুদ্ধদেব বসুর 'কবিতা' পত্রিকায় 'রূপালি স্নান' কবিতাটি প্রকাশিত হলে কবি হিসেবে শামসুর রাহমান সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে উভয় বাংলাতেই তার শ্রেষ্ঠত্ব এবং জনপ্রিয়তা প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি নাগরিক কবি, তবে নিসর্গ তার কবিতায় খুব কম ছিল না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা খুবই জনপ্রিয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি মজলুম আদিব (বিপন্ন লেখক) ছদ্মনামে কলকাতার বিখ্যাত দেশ ও অন্যান্য পত্রিকায় কবিতা লিখতেন।
কবি শামসুর রাহমানের জন্ম পুরনো ঢাকার মাহুতটুলি এলাকায় নানাবাড়িতে। বাবা মুখলেসুর রহমান চৌধুরী ও মা আমেনা বেগম। শামসুর রাহমানের ডাক নাম বাচ্চু। পৈতৃক বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার পাড়াতলী গ্রামে। কবি শামসুর রাহমান ১৩ জন ভাই-বোনের মধ্যে ছিলেন ৪র্থ। ১৯৪৫ সালে পুরনো ঢাকার পোগোজ স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৪৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং তিন বছর নিয়মিত ক্লাস করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর মূল পরীক্ষা দেননি। ১৯৫৩ সালে পাস কোর্সে বিএ পাশ করে তিনি ইংরেজি সাহিত্যে এমএ (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করলেও শেষ পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি ।
শামসুর রাহমান পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। ১৯৫৭ সালে দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ সহসম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তানের অনুষ্ঠান প্রযোজক ছিলেন। এরপর তিনি আবার ফিরে আসেন দৈনিক মর্নিং নিউজ-এ। সেখানে তিনি ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সহযোগী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৬৪ সালের নভেম্বর মাসে দৈনিক পাকিস্তান (স্বাধীনতা উত্তর দৈনিক বাংলা) এর সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন এবং ১৯৭৭ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি একইসাথে দৈনিক বাংলা ও সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৮৭ সালে সামরিক সরকারের শাসনামলে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এরপর তিনি অধুনা নামের একটি মাসিক সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৫ সালের ৮ই জুলাই শামসুর রাহমান জোহরা বেগমকে বিয়ে করেন। কবির তিন মেয়ে ও দুই ছেলে[৫]। তাদের নাম সুমায়রা আমিন, ফাইয়াজ রাহমান, ফাওজিয়া সাবেরিন, ওয়াহিদুর রাহমান মতিন ও শেবা রাহমান।
কবি শামসুর রাহমান ২০০৬ সালের ১৭ই আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা বেজে ৩৫ মিনিটে ঢাকায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার ইচ্ছানুযায়ী ঢাকাস্থ বনানী কবরস্থানে, নিজ মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।